মেট্রোরেল রচনা – মেট্রোরেল প্রবন্ধ রচনা দেখে নিন

মেট্রোরেল রচনা, মেট্রোরেল প্রবন্ধ রচনা, মেট্রোরেল রচনা pdf

মেট্রোরেল রচনা লেখার উদ্দেশ্য হলো মেট্রোরেল সাম্প্রতিক সময়ে হিট একটি ইস্যু। তাই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মেট্রোরেল রচনা। সরাসরি রচনায় চলে যাই।

মেট্রোরেল রচনা

ভূমিকা

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় নির্মিত হচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। বিশ্লেষকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, এটি পুরো ঢাকার ট্রাফিক সমস্যা কমিয়ে আনবে। যেহেতু ঢাকা বিশ্বের জনবহুল মেগা সিটিগুলোর মধ্যে অন্যতম, সেহেতু এই শহরের ট্রাফিক সমস্যা দূর করার জন্য মেট্রোরেল।

প্রকল্প একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে মেট্রোরেল আগে থেকেই রয়েছে। ঢাকার ট্রাফিক সমস্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০১২ সালে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এটি নির্মাণ করা বড় চ্যালেঞ্জ হলেও প্রকল্পটি শেষ করার জন্য সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ঢাকাতে এখনো কোনো মাস-ট্রানজিট ব্যবস্থা নেই। তাই মেট্রোরেল প্রকল্প ঢাকাবাসীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মেট্রোরেল কী মেট্রোরেল রচনা

ঢাকা মেট্রোরেল ব্যবস্থাকে মাস র‍্যাপিড ট্রান্সপোর্ট | সংক্ষেপে MRT হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। এটি সুবিধাজনক, দ্রুতগামী, | স্বাচ্ছন্দ্যময় নগরকেন্দ্রিক যানবাহন। মেট্রোরেল একটি বিদ্যুৎচালিত পরিবহন। মেট্রোরেল রচনা

প্রকল্প বর্ণনা (মেট্রোরেল রচনা)

ঢাকা মহানগরী ও তৎসংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ও পরিবেশ উন্নয়নে অত্যাধুনিক গণপরিবহন হিসেবে ছয়টি মেট্রোরেল সমন্বয়ে Dhaka Mass Transit Company Limited (DMTCL)-এর আওতায় মোট ১২৮.৭৪১ কিমি (উড়াল ৬৭.৫৬৯ কিমি ও পাতাল ৬১.১৭২ কিমি) দীর্ঘ ও ১০৪টি স্টেশন (উড়াল ৫১টি ও পাতাল ৫৩টি) বিশিষ্ট একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার নিমিত্তে সরকার সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা ২০৩০ গ্রহণ করেছে। মেট্রোরেল রচনা

কাজের অগ্রগতি ও সম্ভাব্যতা মেট্রোরেল রচনা

 

১. এমআরটি লাইন-৬ বা বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল:

এই লাইন ২০.১০ কিমি দীর্ঘ। প্রায় ২২,০০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে উত্তরা ৩য় পর্ব হতে মতিঝিল পর্যন্ত Mass Rapid Transit (MRT) Line 6 প্রথম উড়াল মেট্রোরেল নির্মাণের সার্বিক অগ্রগতি ৫৫.১৯%। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও অংশের কাজের অগ্রগতি ৭৮.৩৮%।

দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজের অগ্রগতি ৪৯.৪৭%। দায়িত্বরতরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, করোনা পরিস্থিতিতে যেভাবে কাজ চলছে তা অব্যাহত থাকলে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই রেলপথটি সম্পন্ন হবে (সূত্র: ৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ঢাকা ট্রিবিউন) ।

২. এমআরটি লাইন-১ বা বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল:

৩১.২৪১ কিমি দীর্ঘ MRT Line-1 দুটি অংশে বিভক্ত। ক. বিমানবন্দর, খ.পূর্বাচল।

ক. বিমানবন্দর:

বিমানবন্দর রুটের দৈর্ঘ্য ১৯.৮৭২ কিমি এবং মোট পাতাল স্টেশনের সংখ্যা ১২টি। এ রুটেই বাংলাদেশের প্রথম পাতাল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হচ্ছে।

খ. পূর্বাচল:

পূর্বাচল রুটের মোট দৈর্ঘ্য ১১.৩৬৯ কিমি। সম্পূর্ণ অংশ উড়াল এবং মোট স্টেশন সংখ্যা ৯টি। এর মধ্যে ৭টি উড়াল স্টেশন ।

৩. এমআরটি লাইন-৫; নর্দান রুট:

২০২৮ সালের মধ্যে হেমায়েতপুর হতে ভাটারা পর্যন্ত পাতাল ও উড়াল সমন্বয়ে ২০ কিমি দীর্ঘ মেট্রোরেলের পরিকল্পনা রয়েছে। পাতাল ১৩.৫০ কিমি এবং উড়াল ৬.৫০ কিমি। এতে ১৪টি স্টেশন (পাতাল ৯টি ও উড়াল ৫টি) রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে নকশা পরিকল্পনা ও জরিপের কাজ চলমান। মেট্রোরেল রচনা

৪. এমআরটি লাইন-৫; সাউদার্ন রুট:

২০৩০ সালের মধ্যে গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে ১৭.৪০ কিমি দীর্ঘ এবং ১৬টি স্টেশন বিশিষ্ট মেট্রোরেলের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাতাল ১২.৮০ কিমি ও উড়াল ৪.৬০ কি.মি.। এতে স্টেশন থাকবে ১৬টি। ১২টি পাতাল ও ৪টি উড়াল স্টেশন।

৫. এমআরটি লাইন-২:

২০৩০ সালের মধ্যে গাবতলী থেকে চট্টগ্রাম রোড পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে প্রায় ২৪ কিমি দীর্ঘ G2G ভিত্তিতে PPP পদ্ধতিতে MRT Line-2 নির্মাণের লক্ষ্যে জাপান ও বাংলাদেশ সরকার সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে।

৬. এমআরটি লাইন-৪:

২০৩০ সালের মধ্যে PPP পদ্ধতিতে কমলাপুর-নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে ট্র্যাকের পাশ দিয়ে প্রায় ১৬ কিমি দীর্ঘ উড়াল মেট্রোরেল হিসেবে এমআরটি লাইন-৪ নির্মাণের উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন আছে।

মেট্রোরেলের উপকারিতা মেট্রোরেল রচনা

ক. যানজট দূরীকরণ:

ঢাকায় বর্তমানে ১.৭০ কোটির বেশি লোক বসবাস করে। আয়তনের তুলনায় এই জনসংখ্যা অনেক বেশি। তাই স্বভাবতই যানজট সমস্যা আমাদের নিত্যসঙ্গী। মেট্রোরেল। প্রকল্প ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করবে বলে যানজট অনেকটা হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।

খ. জনগণ সহজেই চলাফেরা করতে পারবে:

জনসংখ্যার তুলনায় ঢাকায় যানবাহনের সংখ্যা অপ্রতুল। লোকজন গণপরিবহনে ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করে। বৃদ্ধ, শিশু, প্রতিবন্ধী, নারীদের জন্য এভাবে চলাফেরা করা খুবই কষ্টকর। মেট্রোরেল যথাসময়ে অনেক যাত্রী পরিবহন করবে বলে লোকজন স্বচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারবে। মেট্রোরেল রচনা

গ. অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালীকরণ:

মেট্রোরেল প্রকল্প ঢাকাবাসীর পরিবহন খরচ অনেকাংশে কমিয়ে দেবে। সরকারেরও এই প্রকল্প থেকে ব্যাপক আয় হবে। অপচয় রোধ হবে, দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে।

ঘ. সময়ের অপচয় রোধ:

ঢাকাবাসীর প্রধান সমস্যা সময় অনুযায়ী কর্মস্থলে পৌঁছতে না পারা। মেট্রোরেল প্রতিটি স্টেশনে মাত্র ৪০ সেকেন্ড দাঁড়াবে। তাই সকলে নির্ধারিত সময়ে যার যার কর্মস্থলে পৌঁছতে সক্ষম হবে।

ঙ. সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন ঢাকা:

মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অকেজো যানবাহনের সংখ্যা হ্রাস পাবে। যত্রতত্র যানবাহনের জট থাকবে না। পরিকল্পনা অনুযায়ী যানবাহন চলাচল করবে। যাত্রীরা নির্ধারিত স্থান থেকে ওঠানামা করবে। ফলে একটি সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন ঢাকা উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। রেলের ধারাবাহিক চলাচল মনোরম দৃশ্য ধারণ করবে। বিশ্ববাসীর কাছে আর ঢাকা অপরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে পরিচিতি পাবে না। বিদেশিরা বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাবে। মেট্রোরেল রচনা

উপসংহার

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গড়ে ১৭০০ মানুষ নতুন বসবাসকারী হিসেবে ঢাকায় আসে। এমনিতে ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যান্য শহরের তুলনায় অনেক বেশি, আবার বাড়তি জনসংখ্যার চাপ মোকাবিলার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৪ মিনিট পরপর একটি ট্রেন ১৮০০ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে বলে ট্রাফিক জ্যাম দ্রুত হ্রাস পাবে। পরিবেশবান্ধব ও. পরিকল্পিত নগরী হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পাবে ঢাকা। মেট্রোরেল রচনা


আরো পড়ুন:

মেট্রোরেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন:

 

শেষকথা:

মেট্রোরেল রচনা সম্পর্কে আজকের পোস্ট ভালো লাগলে বা একটি উপকারে আসলে শেয়ার করুন বন্ধুদের মাঝে। আর নিচে বেল বাটন চেপে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন যেন অনলাইনে আয় সম্পর্কিত পোস্টগুলো সবার আগে পেয়ে যান। আসসালামু আলাইকুম।

Leave a Comment